আদালত অবমাননার মামলায় শেখ হাসিনার ৬ মাসের কারাদণ্ড

ফাইল ছবি

 

অনলাইন ডেস্ক : ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের শাকিল আকন্দ বুলবুল ওরফে মো. শাকিল আলমকে (৪০) দুই মাসের কারাদণ্ড দেন ট্রাইব্যুনাল। ফলে পালিয়ে যাওয়ার পর প্রথমবার সাজাপ্রাপ্ত হলেন শেখ হাসিনা ও শাকিল আকন্দ।

 

বুধবার (২ জুন) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক প্যানেল এ রায় ঘোষণা করেন।

ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

 

গত ১৯ জুন আদালত অবমাননার এই মামলার পূর্ণাঙ্গ শুনানির জন্য এ ওয়াই মশিউজ্জামানকে অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের বন্ধু) হিসেবে নিয়োগ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য ২ জুলাই দিন ধার্য করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় আজ সেটির শুনানি শেষে এ আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।

 

আইন অনুযায়ী, এ ধরনের মামলায় কোনো পক্ষের জন্য সরকারি খরচে আইনজীবী নিয়োগের বিধান না থাকলেও ন্যায়বিচারের স্বার্থে শেখ হাসিনার পক্ষে একজন আইনজীবী নিয়োগ দেন আদালত।

 

অ্যামিকাস কিউরি নিয়োগের পর প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম সাংবাদিকদের বলেন, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ নেতা শাকিল আলম বুলবুলের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগের শুনানিতে একজন অ্যামিকাস কিউরি (আদালত বন্ধু) নিয়োগ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

 

পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পরও শেখ হাসিনা ও অপর অভিযুক্ত হাজির না হওয়ার প্রেক্ষাপটে বিচারের স্বচ্ছতার স্বার্থে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী এ ওয়াই মশিউজ্জামানের অভিমত ট্র্যাইব্যুনাল শুনবেন বলে জানান প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘটনায় দায়ের করা মামলা নিয়ে দেওয়া বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা ও ছাত্রলীগ নেতা শাকিল আলম বুলবুলের বিরুদ্ধে গত ৩০ এপ্রিল আদালত অবমাননার অভিযোগ দাখিল করেন চিফ প্রসিকিউটর। সেদিন ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ গ্রহণ করে ১৫ মের মধ্যে অভিযুক্তদের জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু ওইদিন কোনো জবাব দাখিল না করায় তাদের ২৫ মে ট্রাইব্যুনালে হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।

 

এর আগে ‘আমার বিরুদ্ধে ২২৭টি মামলা হয়েছে, তাই ২২৭ জনকে হত্যার লাইসেন্স পেয়ে গেছি’-এমন বক্তব্যের শেখ হাসিনা একটি অডিও ভাইরাল হয়। পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ওই কথোপকথনের ফরেনসিক পরীক্ষা করে সত্যতা পায়। এরপরই আদালত অবমাননার আবেদন দাখিল করা হয় ট্রাইব্যুনালে।

 

প্রসিকিউশন জানায়, পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরও শেখ হাসিনা নিজে উপস্থিত হননি কিংবা কোনো আইনজীবীর মাধ্যমে ব্যাখ্যা দেননি। এ অবস্থায়, ট্রাইব্যুনাল এখন আইন অনুযায়ী সংশ্লিষ্টদের শাস্তি দিতে পারে।

ট্রাইব্যুনালের বিধান অনুযায়ী, আদালত অবমাননার অভিযোগ প্রমাণিত হলে এক বছরের কারাদণ্ড অথবা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডই হতে পারে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ভারত বাংলাদেশ সফরে না এলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বিসিবি!

» পিআর পদ্ধতিতে ভোটাধিকার নিশ্চিত হবে, রোধ হবে দুর্নীতি : মাসুদ সাঈদী

» ইনসাফ ও মর্যাদার বাংলাদেশের জন্য লড়াই করছে এনসিপি : নাহিদ ইসলাম

» ‘কুলি’-তে আমির খানের রাফ লুক, ফার্স্ট লুকেই চমক

» ফ‍্যাসিস্টদের পুশইন করুন, বিচার করতে প্রস্তুত আমরা : নাহিদ

» টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হিমাচল, মৃত অন্তত ৬৩

» জয়ার সিনেমার ট্রেলার শেয়ার করে যা বললেন অমিতাভ

» ‘বাংলাদেশে ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগ বলে কোনো রাজনৈতিক দল থাকবে না’

» গোলাম মাওলা রনি টেলিভিশন টকশোতে অসত্য তথ্য ছড়াচ্ছেন : প্রেসসচিব

» দমকা হাওয়াসহ বজ্রবৃষ্টির শঙ্কা, ৭ নদীবন্দরে সতর্ক সংকেত

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

আদালত অবমাননার মামলায় শেখ হাসিনার ৬ মাসের কারাদণ্ড

ফাইল ছবি

 

অনলাইন ডেস্ক : ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের শাকিল আকন্দ বুলবুল ওরফে মো. শাকিল আলমকে (৪০) দুই মাসের কারাদণ্ড দেন ট্রাইব্যুনাল। ফলে পালিয়ে যাওয়ার পর প্রথমবার সাজাপ্রাপ্ত হলেন শেখ হাসিনা ও শাকিল আকন্দ।

 

বুধবার (২ জুন) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক প্যানেল এ রায় ঘোষণা করেন।

ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

 

গত ১৯ জুন আদালত অবমাননার এই মামলার পূর্ণাঙ্গ শুনানির জন্য এ ওয়াই মশিউজ্জামানকে অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের বন্ধু) হিসেবে নিয়োগ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য ২ জুলাই দিন ধার্য করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় আজ সেটির শুনানি শেষে এ আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।

 

আইন অনুযায়ী, এ ধরনের মামলায় কোনো পক্ষের জন্য সরকারি খরচে আইনজীবী নিয়োগের বিধান না থাকলেও ন্যায়বিচারের স্বার্থে শেখ হাসিনার পক্ষে একজন আইনজীবী নিয়োগ দেন আদালত।

 

অ্যামিকাস কিউরি নিয়োগের পর প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম সাংবাদিকদের বলেন, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ নেতা শাকিল আলম বুলবুলের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগের শুনানিতে একজন অ্যামিকাস কিউরি (আদালত বন্ধু) নিয়োগ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

 

পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পরও শেখ হাসিনা ও অপর অভিযুক্ত হাজির না হওয়ার প্রেক্ষাপটে বিচারের স্বচ্ছতার স্বার্থে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী এ ওয়াই মশিউজ্জামানের অভিমত ট্র্যাইব্যুনাল শুনবেন বলে জানান প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘটনায় দায়ের করা মামলা নিয়ে দেওয়া বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা ও ছাত্রলীগ নেতা শাকিল আলম বুলবুলের বিরুদ্ধে গত ৩০ এপ্রিল আদালত অবমাননার অভিযোগ দাখিল করেন চিফ প্রসিকিউটর। সেদিন ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ গ্রহণ করে ১৫ মের মধ্যে অভিযুক্তদের জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু ওইদিন কোনো জবাব দাখিল না করায় তাদের ২৫ মে ট্রাইব্যুনালে হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।

 

এর আগে ‘আমার বিরুদ্ধে ২২৭টি মামলা হয়েছে, তাই ২২৭ জনকে হত্যার লাইসেন্স পেয়ে গেছি’-এমন বক্তব্যের শেখ হাসিনা একটি অডিও ভাইরাল হয়। পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ওই কথোপকথনের ফরেনসিক পরীক্ষা করে সত্যতা পায়। এরপরই আদালত অবমাননার আবেদন দাখিল করা হয় ট্রাইব্যুনালে।

 

প্রসিকিউশন জানায়, পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরও শেখ হাসিনা নিজে উপস্থিত হননি কিংবা কোনো আইনজীবীর মাধ্যমে ব্যাখ্যা দেননি। এ অবস্থায়, ট্রাইব্যুনাল এখন আইন অনুযায়ী সংশ্লিষ্টদের শাস্তি দিতে পারে।

ট্রাইব্যুনালের বিধান অনুযায়ী, আদালত অবমাননার অভিযোগ প্রমাণিত হলে এক বছরের কারাদণ্ড অথবা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডই হতে পারে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com